কলেজ ছাত্রী পাত্তা না দেওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কলেজ ছাত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপাল এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ই নভেম্বর, বুধবার সন্ধ্যায় মধ্যমগ্রামের বিবেকানন্দ নগর এলাকায়। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জখম ছাত্রীকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এদিকে, পুলিশ গতকাল ১৬ই নভেম্বর, বৃহস্পতিবার দেগঙ্গা থেকে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তারও করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম কাজি পাপ্পু শেখ । ধৃত যুবক জেরায় অপরাধের কথা কবুল করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই কলেজ ছাত্রীর বাড়ি দেগঙ্গার ইয়াজপুর এলাকায়। তিনি প্রথম বর্ষের কলেজ ছাত্রী। ইয়াজপুর এলাকাতেই পাপ্পুর বাড়ি। গত ১৮ জুলাই নিখোঁজ হয়ে যায় ওই ছাত্রী। তাঁকে খুঁজে না পেয়ে পরদিন ১৯ জুলাই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন দেগঙ্গা থানায় লিখিত জানান। বিষয়টি নিয়ে হইচই হতেই গত ২১ জুলাই এক ব্যক্তি ওই ছাত্রীকে থানায় দিয়ে যায়। পরে, জানা যায় ওই ব্যক্তি পাপ্পুর দাদা। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, পাপ্পু তাঁদের মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। জোর করে প্রেম করার চেষ্টা করত। পাপ্পুই তাঁকে অপহরণ করেছিল। পরে, জানাজানি হয়ে যাওয়ায় ছাত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছে সে।
এদিকে, এই ঘটনার পর ছাত্রীর বাড়ির লোকজন আতঙ্কে ছিলেন। পুনরায় যাতে এই ঘটনা না ঘটে তার জন্য তাকে মধ্যমগ্রামের দিকবেড়িয়া এলাকায় মাসির বাড়িতে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই সে পড়াশোনা করছিলো। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় সে টিউশন পড়ে মাসির বাড়ির দিকে ফিরছিলো। তার সঙ্গে এক বান্ধবীও ছিলো। অভিযোগ, বিবেকানন্দ নগর এলাকায় হঠাৎ পাপ্পু এসে হাজির হয়। সে তাদের পথ আটকায়। ওই কলেজ ছাত্রী তাকে সরে যেতে বলে। তারপরই আচমকা সে ধারালো অস্ত্র বের করে ওই ছাত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপায়। সে এবং তার বান্ধবী বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকারও করে। অস্ত্রের আঘাতে ওই ছাত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তারপরই ওই যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে, চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। তাঁরা রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে মধ্যমগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাতেই আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পাপ্পুকে দেগঙ্গার সোহাই-শ্বেতপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেরায় সে পুলিশের কাছে দাবি করেছে, সে অপহরণ করেনি। সম্প্রতি, ওই ছাত্রী তাকে পাত্তা না দিয়ে অন্য এক ছাত্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলো। সেই রাগেই সে তাকে খুন করার জন্য এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। যদিও সে সত্যি বলছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছি। সে অপরাধ কবুল করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রণয়ঘটিত কারণে এই ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। তবে, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।