
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আর তাতেই নৃশংস ভাবে পিটিয়ে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হলো এক ব্যক্তি কে। ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম এলাকায়।
বিবিসি সূত্রে জানানো হচ্ছে বৃহস্পতিবার বিকেলে বুড়িমারী জামে মসজিদে দু’জন লোক বাইক নিয়ে নামাজ পড়তে আসে । আসরের নামাজ। নামাজ পড়া শেষে, যে কোনো কারণেই হোক তাদের সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত কিছু মানুষের কথা কাটাকাটি হয়। ওনারা নাকি একটা শেলফে পা দিয়েছিলেন। সেই থেকে খবর ছড়িয়ে যায় ওনারা নাকি কোরআন শরীফের ওপর পা দিয়ে নবী কে অপমান করেছেন। দাবানলের মতো ছড়িয়ে পরে এই খবর। শয়ে শয়ে মানুষ মসজিদের সামনে জড়ো হতে থাকে। উন্মত্ত জনতার সামনে পরে যায় ওই দুই ব্যক্তি।
লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা সংবাদ মাধ্যম কে জানিয়েছেন যে যখন মসজিদের সামনে উন্মত্ত জনতার ভিড় বাড়তে থাকে । সেই সময় পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয় । এরই মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের একজন মেম্বার ওই ব্যক্তিকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একটা রুমের মধ্যে আটকে রাখে। পরে পুলিশ আসলে হ্যান্ডওভার করবে বলে । পুলিশ আসার মধ্যেই উন্মত্ত জনতা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রিল ভেঙে ভিতরে ঢুকে পরে, শয়ে শয়ে লোক বিভিন্ন দিক দিয়ে ঢুকতে থাকে ।ঘটনাস্থলে দুজনের একজনকে জোর করে নিয়ে যায় তারা। তাকে পিটিয়ে খুন করে ,তার গাড়ি সহ তাকেও ওই জায়গাতেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অন্য একজন ব্যক্তি কে কোনোরকমে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
খুন হওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা না গেলেও পুলিশ সূত্রে জানানো হচ্ছে তৌহিদুন্নবী নামের এক ব্যক্তি নিজেকে নিহতের ভাই বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, তার ভাইকে পিটিয়ে হত্যার খবর তারা প্রথমে লোকমুখে শুনেছেন। তারা বিস্তারিত জানতে পারেননি। তবে ঘটনাটি তাদের হতবাক করেছে।
সংবাদ মাধ্যম কে তিনি বলেছেন, “আমরাও তো শুনছি। আমরা কনফার্ম না। আমরাতো কিছুই জানি না। আমরা অন্ধকারে আছি। এতটুকু শুনছি যে ও নাকি বুড়িমারি গেছে ওখানে নাকি লোকজন ওকে গণধোলাই দিছে। দিয়ে নাকি পিটায়ে মেরে ফেলছে। এই খবরটা পাইছি। ও রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের টিচার ছিল। একবছর আগে চাকরি থেকে অব্যাহতি পাইছে। মানসিক একটু অ্যাবনরমালিটি হয়ছিল। খুব যে সিভিয়ার তা না। এমনি একটু মানসিক বিপর্যস্ত ছিল এই আরকি। কারো সাথে কোনো রকম ঝামেলা ছিল না,” জানিয়েছেন তৌহিদুন্নবী।
একদিকে ফ্রান্স সহ গোটা বিশ্বে বিধর্মী কাফের দের কে ইসলাম অবমাননার জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে অন্যদিকে বাংলাদেশের মতো ইসলামিক রাষ্ট্রে ইসলাম অবমাননার জন্য একজন মুসলমান কেই পিটিয়ে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সত্যি কি ইসলাম শান্তির ধর্ম? নাকি ইসলামের নিষ্ঠুর দিকটি প্রকৃত বাস্তব ? প্রশ্ন তুলছে সারা বিশ্বের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ।