তিন তালাকের মতো প্রথাকে যখন অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট, তখন শরিয়তের দোহাই দিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ের বিরোধিতা করেছিল মুসলিম সমাজের একাংশ। এমনকী, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও মুসলিম মহিলাদের তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। আর এবার নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসকেও ধর্ষণ বলে মানতে নারাজ মুসলিম ধর্মগুরুদের একাংশ। এক্ষেত্রেও বাল্যবিবাহের মতো কুপ্রথাকেই কার্যত সমর্থন করছেন তাঁরা। মুসলিম ধর্মগুরু মাজিদ হায়দারির সাফ কথা, মুসলিমদের কাছে সুপ্রিম কোর্টের রায় কখনই শরিয়তের উর্ধ্বে হতে পারে না। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় যে শরিয়ত অনুযায়ী কোনো বালিকা বয়ঃসন্ধিতে ঋতু কালে পৌঁছলে সে বিবাহের যোগ্য।
এমনিতে এদেশের আইনে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে কোনও মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে, তা ধর্ষণ বলেই গণ্য হয়। কিন্তু, বিয়ের পর স্বাভাবিক নিয়মেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু, স্বামী যদি স্ত্রীর আপত্তি অগ্রাহ্য করে, তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে সেটি বৈবাহিক ধর্ষণের পর্যায়ে পড়ে। তবে বৈবাহিক ধর্ষণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ কিনা, সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি। তবে বুধবার এক ঐতিহাসিক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসকে আইনে চোখে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হবে। অনেকেই বলছেন, প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে যৌনতায় সম্মতির প্রশ্ন আসে না। তাই নাবালিকাদের বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই প্রেক্ষাপটে বিবাহিত নাবালিকাদের যৌন নিগ্রহ রুখতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট।যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের তীব্র বিরোধিতা করেছেন মুসলিম ধর্মগুরু মাজিদ হায়দারি। তাঁর সাফ কথা, মুসলিমদের কাছে সুপ্রিম কোর্টের রায় কখনই শরিয়তের থেকে বড় হতে পারে না। এমনকী, মুসলিমরা সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতেও বাধ্য নন বলে মন্তব্য করেছেন এই মুসলিম ধর্মগুরু। মাজিদ হায়দারি জানিয়েছেন, শরিয়তি আইনে ঋতুবতী বালিকাদের বিবাহযোগ্য বলে গণ্য করা হয়। তবে কোন বয়সে বিয়ে করবে, সেটা ঠিক করার অধিকার বালিকাদের আছে।